Ashok Leyland Viking B1616 Intercity Coach

" অশোক লিল্যান্ড "       " ASHOK LEYLAND "

ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম অটোমোবাইলস এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এটি "হিন্দুজা" গ্রুপের একটি অংশ বা অঙ্গসংগঠন।

১৯৪৮ সালে, জনাব 'রাঘুনন্দন স্মরন'  এর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় "অশোক মোটরস" । তিনি এর নামকরণ করেন তার একমাত্র ছেলে, 'অশোক স্মরন' এর নামে। এই প্রতিষ্ঠানের কাজ ছিলো ইংল্যান্ডের  "অ্যস্টিন"  কারস এর অ্যাসেম্বল ও বাজারজাত করা। 

পরবর্তীতে ১৯৫৪ সালে, ইংলিশ "লিল্যান্ড" মোটরসের সাথে একত্রে এর কার্যক্রম সামনে আগানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়, যার ফলশ্রুতিতে এর নামকরণ করা হয়েছে, "অশোক লিল্যান্ড" ।

১৯৮০ এর শুরুর দিকে অশোক লিল্যান্ড তাদের গাড়ির মান উন্নয়নের লক্ষ্যে জাপানিজ "টয়োটা" এর অঙ্গসংগঠন "হিনো মোটরস" এর সাথে যুক্ত হয়ে নতুন ইঞ্জিন ও ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর জন্য কাজ শুরু করে। AL-Hino জয়েন্ট ভেঞ্চারেই বর্তমানের  "H-Series"  ইঞ্জিন উৎপাদিত হচ্ছে।

এই "H-Series" ইঞ্জিন মূলত সর্বোচ্চ ফুয়েল ইকোনমি দেয়ার জন্য সুপরিচিত।

আমাদের দেশের রাস্তায় সচারচর চোখে পরে, অশোক লিল্যান্ডের বাস,‌ ট্রাক ও মিনি ট্রাক। যার অধিকাংশই, "H-Series" ইঞ্জিন যুক্ত।

অশোক লিল্যান্ডের ইন্টারসিটি কোচের মধ্যে একটি হলো 'অশোক লিল্যান্ড বি-১৬১৬' , যা ভারতের বাজারে, 'ভাইকিং-১৬০' নামে সুপরিচিত।


তো ইফাদ অটোস (বাংলাদেশে অশোক লিল্যান্ডের আমধানীকারক) এটিকে ' বি-১৬১৬ সুপার ' নামেও পরিচিত করিয়েছে। যা তাদের দেয়া চ্যাসিস কোডের সাথে সম্পূর্ণ ভুল।। এর চ্যাসিস কোড হলো, "ALPSV 4/186"  ।

বি-১৬১৬ চ্যাসিস টি মোটামুটি ১১ মিটার লম্বা। ৫৬৩৯ মিলিমিটারের হুইলবেস সম্পন্ন, এই চ্যাসিসটি সর্বোচ্চ ১৬,২০০ কেজি ওজন বহনক্ষম। ২৫০ মিলিমিটারের গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স। ২০ ইঞ্চি রিমের টায়ার সাইজ হলো, "10 R 20- 16PR" । এই চ্যাসিসের সামনে ও পেছনে রয়েছে শক-অ্যাবসর্বার যুক্ত কয়েক ধাপের লিফ স্প্রিং সাসপেনশন।

চ্যাসিসটি লম্বাটে হওয়ায় এর টার্নিং রেডিয়াস প্রায় ২২ মিটার!


এর রয়েছে সুপরিচিত "H-Series" এর ৫.৭৬ লিটারের টার্বোচার্জড ইন্টারকুলড বিএস-৩ (ইউরো-৩) স্ট্যান্ডার্ড ইন লাইন ফুয়েল পাম্প যুক্ত ইঞ্জিন, যা ১৬০ হর্স পাওয়ার ও ৫৫০ নিউটন মিটারের টর্ক (১৫০০-১৭০০ আরপিএম) উৎপাদন করে।  

টার্বোচার্জড হওয়াতে এটির গতি ও বেশ তাড়াতাড়ি ওঠে, পাশপাশি, খুব সুন্দর ইঞ্জিন সাউন্ড পাওয়া যায় এবং এর ক্ষমতা উপলব্ধি করা যায়।

১৫" এর সিঙ্গেল প্লেট ডায়া ক্লাচ এর সাথে রয়েছে ৬ স্পিডের ওভার ড্রাইভ যুক্ত ZF 6S-36 OD ট্রান্সমিশন । ওভার ড্রাইভ যুক্ত হওয়ায়, হাইওয়ে তে লো আরপিএমে বেশি গতির পাশাপাশি এটি ভালো ফুয়েল ইকোনমি দিতে সক্ষম। এর অ্যাভারেজ ফুয়েল ইকোনমি ৩-৫  কিলোমিটার প্রতি লিটার ডিজেলে।

এছাড়াও, রয়েছে ২৩৯ লিটারের ডিজেল ট্যাংক। একবার ফুল ট্যাংক তেল নিলে অনায়াসে ৯০০ কিলোমিটারেও বেশি চালানো সম্ভব।

এটির মূল্য ২৫ লক্ষ টাকার আশেপাশে। যা জাপানিজ বাস চ্যাসিসের অর্ধেকেরও কম।
রেগুলার মেইনটেন্যান্স যেমন-‌ এয়ার ফিল্টার, অয়েল ফিল্টার ও ফুয়েল ফিল্টার পরিষ্কার বা পরিবর্তন করার পাশাপাশি, ভালো মানের ডিজেল ও সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে, আর নির্দিষ্ট নিয়মে গিয়ার পরিবর্তন ও নির্দিষ্ট গতিতে চালালে এটি থেকে সর্বোচ্চ ফুয়েল ইকোনমি পাওয়া সম্ভব।


আর, সবথেকে লো মেইনটেন্যান্স খরচের গাড়ি এটি। এর পার্টস এর দাম খুব কম এবং সহজলভ্য ।


কিন্তু আমাদের সমস্যা হলো, কমদামী হওয়াতে আমরা সঠিক ভাবে মেইনটেন্যান্স বা রক্ষণাবেক্ষণ করি না। এজন্য এর দীর্ঘায়ু কম আমাদের দেশে। তাই, রেগুলার মেইনটেন্যান্স ও পার্টস পরিবর্তন করলে, এই গাড়ির স্টক ইঞ্জিন দিয়ে অনায়াসে ৩-৪ বছর ভালো ভাবে চালানো সম্ভব। আর পরবর্তী তে ইঞ্জিন পরিবর্তন করলে পুনরায় নতুন গাড়ির স্বাদ পাওয়া সম্ভব।

*** কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যেই ভাই ছবি টি দিয়েছিলেন ***

ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য।





আমাদের পেজ টি ফলো‌ করুন আরো তথ্যবহুল পোস্টের জন্য। পাশাপাশি শেয়ার করুন আর আপনাদের মতামত জানান। আমরা আপনাদের মতামতের ভিত্তিতে কাজ করে থাকি।

সাবস্ক্রাইব করুন বাংলাদেশের একমাত্র অ্যাডভার্টাইজবিহীন অটো ব্লগ Xpress Moto তে।

Comments

Popular posts from this blog

Tata 709 Ex2 Mini-Truck

Isuzu MT134Q

Mitsubishi BM-117 Turbo

Hero Hunk 2019 Matt Edition

Mitsubishi Lancer EX

Tata LPO-1618 Bus